খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ পৌষ, ১৪৩১ | ২৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব ‘শুভ বড়দিন’ আজ

মৃত্যু ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

মজিবুর রহমান, মুর্শিদাবাদ

করোনা ভাইরাস দাপটের সঙ্গে ব‍্যাটিং করছে। দেড় বছর ধরে ক্রিজে থাকলেও আউট হওয়ার নাম কথা নেই। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাকে দমানো যাচ্ছে না।কাউকে সে ছাড়ছে না। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-দল-মত-আর্থিক-সামাজিক অবস্থা নির্বিশেষে সকলকে আক্রমণ করছে। মহানগর থেকে প্রত‍্যন্ত গ্ৰাম, প্রাসাদ থেকে কুঁড়ে ঘর সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ছে। আত্মরক্ষার্থে আত্মগোপনের কোনও পথ পাওয়া যাচ্ছে না। সতর্কতা সাবধানতা অবলম্বন করেও মিলছে না রেহাই। বিজ্ঞান-অপবিজ্ঞান কোনও কিছুর দ্বারাই করোনাকে কাবু করা যাচ্ছে না। প্রার্থনা-প্রতিবাদ সবই নিষ্ফল মনে হচ্ছে।

ভ‍্যাকসিন নিয়েও কাটছে না ভয়। প্রতিষেধক প্রতিকার করতে পারছে না। হাসপাতালে অক্সিজেনের অভাব। শ্বাসকষ্ট দেখা দিলেই শেষ নিঃশ্বাস ত‍্যাগের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। কেউ চিকিৎসা পেয়ে কেউবা তা না পেয়েই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে। আশেপাশের প্রায় প্রত‍্যেকেই আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী-পরিজন, বন্ধু-বান্ধব, চেনা-জানা লোকজনের মধ‍্যে কাউকে না কাউকে কোভিডে হারিয়েছে। মানুষ আজ দিশেহারা। কোথায় গেলে কী করলে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে কেউ বলতে পারছে না। অসহায় ভাবে করোনায় আক্রান্ত মানুষের মৃত্যু-মিছিল দেখতে হচ্ছে। গণকবর-গণচিতার পর মৃতদেহ নদীতে ভাসিয়ে দেওয়ার মতো মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে। উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত মানুষ কবে কোভিডের কবল থেকে মুক্তি মিলবে তার অপেক্ষায় রয়েছে।

‘জন্মিলে মরিতে হবে, অমর কে কোথা কবে?’- এই চিরন্তন সত‍্যকে প্রশ্নাকারে প্রকাশ করেছেন কবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত। ওই একই কথা ছোট্ট বিবৃতিমূলক বাক‍্যেও বলা হয়- মানুষ মরণশীল। যার জন্ম হয়েছে মৃত্যু তার হবেই। প্রতিটি জীবই একদিন না একদিন জড়ে পরিণত হবে। এর কোনও বিকল্প নেই। কখনও অন‍্যথা হবার নয়। জীবশ্রেষ্ঠ মানুষও এই প্রাকৃতিক নিয়মের পুরোপুরি অধীন। কিন্তু জীবকূলের অনিবার্য পরিণতি মৃত্যুকে মানুষ কখনও সাদরে গ্ৰহণ করে না। অবসম্ভাবী হলেও তা অনাকাক্ষিত। তাই মৃত্যু-আশঙ্কা দেখা দিলেই আমাদের মন খারাপ হয়ে যায়। আমরা যথাসাধ‍্য চেষ্টা করি মৃত্যু-মুহূর্তকে ঠেকিয়ে রাখতে। আসলে দেহগত মৃত্যুর পরবর্তী অবস্থা সম্পর্কে আমরা কেউ নির্দিষ্ট করে কিছু জানি না। সবই অনুমান আর বিশ্বাসের ব‍্যাপার। কোনও স্বচ্ছ ধারণা নেই। কোনও পরীক্ষিত তথ্য নেই। এজন্য মৃত্যু সম্পর্কে মানুষের দ্বিধা, সংশয়, সন্দেহ কখনও দূর হয় না। মৃত্যুর মাধ্যমে অস্তিত্ব লোপের আশঙ্কায় মানুষ বিচলিতবোধ করে। এই অনিশ্চয়তার কারণে রক্ত-মাংসের শরীরটা যতদিন পারা যায় টেনে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু যম যখন দুয়ারে এসে দাঁড়ায় তখন সংশ্লিষ্ট সকলের শত অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাড়া দিতে হয়। ইহলোকের লীলা সাঙ্গ করে দুঃখ-কষ্ট-শোকের আবহে না ফেরার দেশে চলে যেতে হয়।

আজকের অতিমারির মধ্যে দাঁড়িয়ে ‘মৃত্যুঞ্জয়’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মৃত্যু-ভাবনার প্রতি অল্পবিস্তর আলোকপাত করলে খুব একটা অপ্রাসঙ্গিক হবে না। কবি-কল্পনায় মৃত্যুকে নানান মূর্তিতে আবির্ভূত হতে দেখা যায়। যৌবনকালে মৃত্যুর প্রতি কবির বিরূপতা স্পষ্ট উচ্চারণে প্রকাশিত হয়েছে- “মরিতে চাহিনা আমি সুন্দর ভুবনে/মানবের মাঝে আমি বাঁচিবারে চাই।” (‘প্রাণ’- কড়ি ও কোমল, ১৮৮৬)। সংসারে মৃত্যুকে কোনও জায়গা দিতে রাজি নন তিনি- “নহে নহে, সে কি হয় সংসার জীবনময়/নাহি সেথা মরণের স্থান।” (‘নূতন’- কড়ি ও কোমল)। জীবনপ্রেমী কবির মর্ত ছেড়ে স্বগের সন্ধান করার কোনও পরিকল্পনা ছিল না- ”জন্মেছি যে মর্ত-কোলে ঘৃণা করি তারে/ছুটিব না স্বগ আর মুক্তি খুঁজিবারে।” (‘আত্মসমর্পণ’- সোনার তরী, ১৮৯৪)। পরে অবশ্য কবিকে জীবন ও মৃত্যুর প্রতি সমান ভালোবাসা ব‍্যক্ত করতে দেখা যায় “…জীবন আমার/এত ভালোবাসি বলে হয়েছে প্রত‍্যয়,/মৃত্যুরে এমনি ভালোবাসিব নিশ্চয়।” (‘নৈবেদ‍্য’- ৯০ নং, ১৯০১)। তিনি মৃত্যুর মুখোমুখি হতে চান- “মহান মৃত্যুর সাথে মুখোমুখি করে দাও মোরে/বজ্রের আলোতে” (‘বর্ষশেষ’- কল্পনা, ১৯০০)। মৃত্যুকে তিনি জীবনের দোসর হিসেবে বরণ করতে চান- “মরণকে মোর দোসর করে/রেখে গেছ আমার ঘরে/আমি তারে বরণ করে/রাখব পরাণময়।” (‘দান’- খেয়া, ১৯০৬)।

এই ভাবনার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই কবি মৃত্যুকে বৃহৎ প্রেক্ষাপটে দেখার কথা বলেছেন- “ব‍্যক্তিগত হিসাবে দেখলে মৃত্যুটা উৎকট এবং তার মধ্যে কোনও সান্তনা নেই। কিন্তু বিশ্বজগতের হিসাবে দেখতে গেলে মৃত্যুটা অতি সুন্দর এবং মানবাত্মার যথার্থ সান্তনাস্থল।” (‘ছিন্নপত্র’, ১৯১২)। মৃত্যু মানুষকে বাসা বদলের সুযোগ করে দেয় বলে তিনি মনে করেন- “মৃত্যু সাগর মন্থন করে/অমৃত রস আনবো হরে/ওরা জীবন আঁকড়ে ধরে/মরণ-সাধন সাধবে।/কাঁদবে ওরা কাঁদবে।” (‘বলাকা’ ৩ সং,১৯১৬)। জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে তাঁকে দেখা গেছে আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের মতো মরণোত্তর অবস্থা সম্পর্কে সংশয় প্রকাশ করতে- “কী আছে জানি না দিন-অবসানে মৃত্যুর অবশেষে;” (‘প্রশ্নোত্তর’- সেঁজুতি, ১৯৩৮)।

তবে তিনি সংশয় কাটিয়ে মৃত্যুকে সাদরে বরণ করার কথাও বলেছেন- “এল যদি শেষ ডাক/অসীম জীবনে এ ক্ষীণ জীবন শেষ রেখা এঁকে যাক/মৃত্যুতে ঠেকে যাক।” (‘যাবার মুহূর্তে’- সেঁজুতি)।

আশি বছরের (১৮৬১-১৯৪১) জীবনে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বহু আপনজনের মৃত্যু দেখেছেন। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন রকম প্রতিক্রিয়া হয়েছে তাঁর। মৃত্যুশোকে যেমন মূহ‍্যমান হয়েছেন তেমনি স্থিতধী হয়েছেন। কঠিন দুঃখের মধ্যে নিবিড় সুখের সন্ধান করেছেন। সাহিত্য সাধনার মধ্য দিয়েই সকল অনুভূতি প্রকাশ করেছেন। ১৯৭৫ সালের মার্চ মাসে তাঁর মা সারদা দেবীর প্রয়াণ সম্পর্কে ১৯১২ সালে প্রকাশিত ‘জীবনস্মৃতি’তে তিনি লেখেন- “প্রভাতে উঠিয়া যখন মার মৃত্যু সংবাদ শুনিলাম, তখনো সে কথাটার অর্থ সম্পূর্ণ গ্ৰহণ করিতে পারিলাম না। বাহিরের বারান্দায় আসিয়া দেখিলাম, তাঁহার সুসজ্জিত দেহ খাটের উপর শয়ান।

কিন্তু মৃত্যু যে ভয়ংকর সে দেহে তাহার কোনো প্রমাণ ছিল না, সেদিন প্রভাতের আলোকে মৃত্যুর যে রূপ দেখিলাম, তাহা সুখসুপ্তির মতোই প্রশান্ত মনোহর।” ১৮৮৩ সালের ডিসেম্বর মাসে মৃণালিনী দেবীর সঙ্গে বিয়ের পাঁচ মাসের মধ্যে ১৮৮৪ সালের এপ্রিলে কবির বন্ধুসম বৌদী কাদম্বরী দেবীর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘটে। কবি তাঁর ‘পরম নির্ভর’ বৌঠানের মৃত্যু প্রসঙ্গে ‘জীবনস্মৃতি’তে লেখেন- “আমার চব্বিশ বছর বয়সের সময় মৃত্যুর সঙ্গে যে পরিচয় হইল তাহা স্থায়ী পরিচয়। তাহা তাহার পরবর্তী প্রত‍্যেক বিচ্ছেদ শোকের সঙ্গে মিলিয়া অশ্রুর মালা দীর্ঘ করিয়া গাঁথিয়া চলিয়াছে।” ওই বছরই তাঁর তৃতীয় ভ্রাতা হেমেন্দ্রনাথ ঠাকুর চল্লিশ বছর বয়সে প্রয়াত হন। পরের বছর তাঁর কাকা নগেন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছাপান্ন বছর বয়সে প্রয়াণ ঘটে। একের পর এক নিকট আত্মীয়ের মৃত্যু সম্পর্কে পরবর্তীতে তিনি লেখেন- “লঘু জীবন বড়ো বড়ো মৃত্যুকেও অনায়াসেই পাশ কাটাইয়া ছুটিয়া যায়, কিন্তু অধিক বয়সে মৃত্যুকে অত সহজে ফাঁকি দিয়া এড়াইয়া চলিবার পথ নাই। তাই সেদিনকার সমস্ত দুঃসহ আঘাত বুক পাতিয়া লইতে হইয়াছিল।” ওই ‘দুঃসহ আঘাত’ অবশ্য তাঁর সাহিত্যসাধনায় কোনও ব‍্যাঘাত ঘটাতে পারেনি। তিনি কাদম্বরী দেবীর স্মরণে ‘পুষ্পাঞ্জলি’ লেখার পাশাপাশি ব‍্যঙ্গ কৌতুকমূলক পুস্তক ‘রসিকতার ফলাফল’ রচনা করেছেন।

১৮৯৯ সালে রবীন্দ্রনাথের চতুর্থ ভ্রাতা বীরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের একমাত্র সন্তান বলেন্দ্রনাথ ঊনত্রিশ বছর বয়সে মারা যান। এই বন্ধুসম ভ্রাতুষ্পুত্রটি কবিগুরুর ব‍্যবসার সহযোগী ছিলেন। ১৯০২ সালের নভেম্বর মাসে ত্রিশ বছরের কম বয়সে মৃণালিনী দেবীর জীবনাবসান হয়। কবি নিজের হাতে অসুস্থ স্ত্রীর সেবা করেন। কিন্তু তাঁকে বাঁচানো যায়নি। ‘স্মরণ’ কাব‍্যগ্ৰন্থে কবির ঊনিশ বছরের দাম্পত‍্যজীবনের অনেক অনুভূতি প্রকাশিত হয়েছে। সহধর্মিণীর মৃত্যুতে কবি যেন মিলনের পরিপূর্ণতা লাভ করেছেন- “মিলন সম্পূর্ণ আজি/হল তোমা-সনে/এ বিচ্ছেদ বেদনার/নিবিড় বন্ধনে।”

স্ত্রীর প্রয়াণের দশ মাস পরেই কবির কন্যা রেণুকা যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মাত্র বার বছর বয়সে মারা যান। কবিগুরুর পরিবারে ‘অমৃতের দূত’ মৃত্যুর নিত্য আগমন ঘটতে থাকে। ১৯০৫ সালের প্রথম মাসেই প্রয়াত হন মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। ৮৮ বছর বয়সে পিতার প্রয়াণের পর কবি লেখেন- “পরিপূর্ণ ফল যেমন বৃন্তচ‍্যুত নিজেকে সম্পূর্ণ দান করে, তেমনি মৃত্যুর দ্বারাই তিনি তাঁর জীবনকে আমাদের দান করে গেছেন।” কবির কনিষ্ঠ পুত্র শমীন্দ্র ১৯০৭ সালে মাত্র এগার বছর বয়সে কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এই ছেলেটা দেখতে শুনতে অনেকটা তার বাবার মতোই ছিল। একান্ত স্নেহের সন্তানকে হারিয়ে বাইরে থেকে বাড়ি ফেরার পথে রবীন্দ্রনাথ লেখেন- “শমী যে রাত্রে চলে গেল তার পরের রাত্রে রেলে আসতে আসতে দেখলুম জ‍্যোৎস্নায় আকাশ ভেসে যাচ্ছে, কোথাও কিছু কম পড়ছে তার লক্ষণ নেই। মন বলল, পড়েনি- সমস্তের মধ্যে সবাই রয়ে গেছে।আমিও তার মধ্যে।” পুত্রের অন্ত‍্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হবার পর প্রার্থনা-সভায় ‘দুঃখ’ শিরোনামে প্রবন্ধ পাঠ করেন তিনি। বন্ধুদের সমবেদনার উত্তরে লেখেন- “ঈশ্বর যাহা দিয়াছেন তাহা গ্ৰহণ করিয়াছি। আরো দুঃখ যদি দেন তো তাহাও শিরোধার্য করিয়া লইব।আমি পরাভূত হইব না।”

১৯১৩ সালের নভেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল পুরস্কার পাওয়ার খবর প্রকাশিত হয়। ১৯১৫-এর জানুয়ারিতে ব্রিটিশ সরকার তাঁকে নাইটহুড প্রদান করে। ওই বছরই পূর্বেল্লেখিত বীরেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাবসান ঘটে। কবির বত্রিশ বছর বয়সী জ‍্যৈষ্ঠ কন্যা মাধুরীলতা এবং কবির সমবয়সী বোনঝি ইরাবতী দেবী ১৯১৮ সালে প্রয়াত হন। দুই দিদি সৌদামিনী ও শরৎকুমারী মারা যান ১৯২০ সালে। বয়সে দু’বছরের বড় ভাই সোমেন্দ্রনাথ, ভাইপো দ্বিপেন্দ্রনাথ ও ভাইঝি প্রতিভা দেবীর প্রয়াণ ঘটে ১৯২২ সালে। পরের বছর কবির মেজ ভাই সত‍্যেন্দ্রনাথ ঠাকুরের জীবনাবসান হয়। কবির পঞ্চম ভ্রাতা তথা কাদম্বরী দেবীর স্বামী জ‍্যোতিরিন্দ্রনাথ ১৯২৫ সালে প্রয়াত হন। পরের বছর পরলোকগমন করেন কবির জ‍্যৈষ্ঠ ভ্রাতা দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর।

সকল আপনজনের মৃত্যুকেই কবি শান্তভাবে গ্ৰহণ করেছেন, কখনও শোকে-দুঃখে কাতর হয়ে ভেঙে পড়েননি। বিদ্রোহ না করে আরও বিনয়ী ও ভাবগম্ভীর হয়ে সাহিত্যের সকল শাখায় স্বমহিমায় বিচরণ করেছেন।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিদায়বেলায় পৌঁছে বাল‍্যস্মৃতির ‘ছেলেবেলা’ প্রকাশ করেন ১৯৪০ সালে। ১৯৪১ সালের মে মাসে কবিগুরুর জীবনের আশি বছর পূর্ণ হয়। অশীতিপর কবি আর হাঁটতে পারেন না। কলম ধরতে অসুবিধা হয়। কিন্তু মস্তিষ্ক সচল। তাই ঠোঁট নাড়িয়ে কিছু কথা বলেন যা আসলে কাব্য হয়ে ওঠে।

অবশেষে আসে ৭ আগষ্ট (২২ শ্রাবণ, ১৩৪৮)। মাঝ আকাশে যখন সৌরজগতের রবি অবস্থান করছে তখন সাহিত্যজগতের রবি ‘মহান মৃত্যুর’ কোলে ঢলে পড়লেন। মহাপ্রয়াণ ঘটল বিশ্বকবি মনীষী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের যিনি মৃত্যুর মধ্য দিয়েই মৃত্যুকে অতিক্রম করতে চেয়েছেন- “আমি মৃত্যু-চেয়ে বড়ো এই শেষ কথা বলে/যাব আমি চলে।” (‘মৃত‍্যুঞ্জয়’- পরিশেষ, ১৯২৯)।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!